You are currently viewing কোন্‌টি সঠিক? কোরআন না বিজ্ঞান?

কোন্‌টি সঠিক? কোরআন না বিজ্ঞান?

  • Post author:
  • Post last modified:April 27, 2022

কটি বিষয়ে পর্যালোচনা করতে গিয়ে আমরা কোরআনের বহুবিধ সূত্র পাই। আর সে কারণে বোঝা সম্ভব হয় না কোন্‌ উদ্ধৃতিটি সঠিক। কোরআনে বলা হয়েছে জমাটবাঁধা রক্ত থেকে মানুষের সৃষ্টি। কথাটি বিজ্ঞানসম্মত না হলেও তা বারংবার বলা হয়েছে কোরআনের আয়াতে। কিন্তু বিভিন্ন আয়াতে বিভিন্ন সূত্রের উল্লেখ রয়েছে কোরআনে। কোন্‌টি সঠিক তা নিশ্চিত করে বলা কষ্টকর। দেখুন তবে আয়াতের বর্ণনাসমূহ।

ثُمَّ خَلَقْنَا ٱلنُّطْفَةَ عَلَقَةً فَخَلَقْنَا ٱلْعَلَقَةَ مُضْغَةً فَخَلَقْنَا ٱلْمُضْغَةَ عِظَـٰمًا فَكَسَوْنَا ٱلْعِظَـٰمَ لَحْمًا ثُمَّ أَنشَأْنَـٰهُ خَلْقًا ءَاخَرَ ۚ فَتَبَارَكَ ٱللَّهُ أَحْسَنُ ٱلْخَـٰلِقِينَ (١٤)

সূরা মু’মিনূন ২৩: ১৪ আয়াত

বাংলা অনুবাদঃ “পরে আমি শুক্রবিন্দুকে পরিণত করি জমাট রক্তে, পরে জমাট রক্তকে পরিণত করি পিন্ডে এবং পিন্ডকে পরিণত করি অস্থি-পাঁন্জ্ঞরে, পরে অস্থি-পাঁন্জ্ঞরকে মাংস দ্বারা ঢেকে দিই, অবশেষে ওকে আরো এক রূপদান করি। সুনিপুণ স্রষ্টা আল্লাহ কত মহান।”

লক্ষ্য করুন, উল্লেখিত আয়াতে শুক্রবিন্দু থেকে জমাট রক্তের কথা বলা হয়েছে মানুষ সৃষ্টির উদ্ভাবনি প্রক্রিয়ায়।

আরো একটি আয়াতে সমিল খুঁজে পাওয়া যায় একইভাবে।

خَلَقَ ٱلْإِنسَـٰنَ مِنْ عَلَقٍ (٢)

সূরা আলা-ক্ব ৯৬: ২ আয়াত।

বাংলা অনুবাদঃ “সৃষ্টি করেছেন মানুষকে রক্তপিন্ড হতে।”

বস্তুতঃ কোরআনের এ ধারণার সাথে আজকের বিজ্ঞান একমত পোষণ করতে পারে না সে কথা আজ কারো অজানা নয়। বিজ্ঞান বলে পুরুষ ও নারীর দৈহিক মিলনের মধ্য দিয়ে শুক্রনুর সূত্রপাত ও গর্ভধারণের শুরু কিন্তু রক্ত পিন্ড…..

এবার চলুন দেখি আরেকটি ব্যাখ্যা কোরআনের আয়াতে। এখানে বলা হয়েছে একটি ভিন্ন উৎসের কথা।

يَـٰٓأَيُّهَا ٱلنَّاسُ إِن كُنتُمْ فِى رَيْبٍ مِّنَ ٱلْبَعْثِ فَإِنَّا خَلَقْنَـٰكُم مِّن تُرَابٍ ثُمَّ مِن نُّطْفَةٍ ثُمَّ مِنْ عَلَقَةٍ ثُمَّ مِن مُّضْغَةٍ مُّخَلَّقَةٍ وَغَيْرِ مُخَلَّقَةٍ لِّنُبَيِّنَ لَكُمْ ۚ وَنُقِرُّ فِى ٱلْأَرْحَامِ مَا نَشَآءُ إِلَىٰٓ أَجَلٍ مُّسَمًّى ثُمَّ نُخْرِجُكُمْ طِفْلًا ثُمَّ لِتَبْلُغُوٓا۟ أَشُدَّكُمْ ۖ وَمِنكُم مَّن يُتَوَفَّىٰ وَمِنكُم مَّن يُرَدُّ إِلَىٰٓ أَرْذَلِ ٱلْعُمُرِ لِكَيْلَا يَعْلَمَ مِنۢ بَعْدِ عِلْمٍ شَيْـًٔا ۚ وَتَرَى ٱلْأَرْضَ هَامِدَةً فَإِذَآ أَنزَلْنَا عَلَيْهَا ٱلْمَآءَ ٱهْتَزَّتْ وَرَبَتْ وَأَنۢبَتَتْ مِن كُلِّ زَوْجٍۭ بَهِيجٍ (٥)

 সূরা হাজ্জ ২২:৫ আয়াত

বাংলা অনুবাদঃ “আমি তোমাদের মাটি হতে সৃষ্টি করেছি, তারপর শুক্র হতে, তারপর রক্তপিন্ড হতে, তারপর পূর্ণাকৃতি বিশিষ্ট অথবা অসম্পূর্ণবিশিষ্ট মাংসপিন্ড হতে।”

ব্যাপারটি একটু অন্যরকম মনে হচ্ছে না কি? এখানে বলা হয়েছে মাটি থেকে সৃষ্টি করার কথা। ইতিপূর্বে আমরা দেখেছি শুক্রানুর ও রক্তপিন্ডের উদাহরণ। এবার চলুন দেখি আরেকটি নমূনা।

وَهُوَ ٱلَّذِى خَلَقَ مِنَ ٱلْمَآءِ بَشَرًا فَجَعَلَهُۥ نَسَبًا وَصِهْرًا ۗ وَكَانَ رَبُّكَ قَدِيرًا (٥٤)

সূরা আল-ফুরকান ২৫: ৫৪ আয়াত

বাংলা অনুবাদঃ “আর তিনিই পানি থেকে সৃষ্টি করেছেন মানুষকে, অতঃপর তিনি তাকে করেছেন বংশ-সম্পর্কবিশিষ্ট এবং বিবাহ সম্পর্কবিশিষ্ট।”

ব্যাপারটি এখন কি দাঁড়ালো? চারটি বিষয়ের কথা দেখলাম না আমরা? শুক্রবিন্দু, রক্তপিন্ড, মাটি ও পানি। এই চারটি উপাদানের কোন্‌টি সঠিক? কোন্‌ উপাদানে আল্লাহ মানুষ সৃষ্টি করেছেন। এ বিষয়ে কোরআনে ব্যাখ্যা করতে গিয়ে আল্লাহ নিজেই কি সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগেছেন? নাকি তার বান্দাদের অপকর্ম এসব? কোন্‌ উপাদানে তিনি সৃষ্টি করে চলেছেন মানবজাতিকে? কত খেলাই না খেলে চলেছে আল্লাহর খাস বেয়াদপ বান্দারা। যার কারণে প্রশ্নবিদ্ধ হতে হয় স্রষ্টার সার্বভৌমত্বের অস্তিত্ত্ব নিয়ে।

 

Leave a Reply