You are currently viewing কোরআন আবির্ভাবের ইতিহাস (পঞ্চম খণ্ড)

কোরআন আবির্ভাবের ইতিহাস (পঞ্চম খণ্ড)

  • Post author:
  • Post last modified:September 2, 2021

সাতটি বচন ভঙ্গিমায় তেলাওয়াতঃ

আল্লামা সূয়ুতি তার ইতকান পুস্তকে উল্লেখ করেছেন যে, বিশেষজ্ঞরা তাদের নিজেদের মধ্যে এক ধরনের পার্থক্যের বিষয়ে একমত হয়েছেন। ইবন কুতায়বা বলেছেন যে, এই উচ্চারণসমূহে যে শুধুমাত্র উচ্চারণগত পার্থক্য রয়েছে তা নয়, এর আভিধানিক অর্থেরও পার্থক্য রয়েছে। এর কিছু শব্দের অর্থ উচ্চারণের তারতম্যের সাথে পরিবর্তন হয়ে যায়। ইবন কুতায়বা যিনি ছিলেন তার সময়কালে প্রসিদ্ধ একজন আলেম ও বিশেষজ্ঞ তিনি বলেছেন এ কথা।

ইবন আল-জাযরি তার এই অভিমতের সাথে সম্মত হয়ে বলেছেন যে, এক তেলাওয়াত থেকে অন্য তেলাওয়াতকালে অর্থ পরিবর্তন হয়ে যায়। তারা এসব কথা উল্লেখ করে বলেছেন যে, মুসলিম মনীষীরা এ কথা বলেন কেননা এহেন তারতম্যের কারণেই ওমর ও হিশাম ইবন হাকিম এর মধ্যে সেই দুর্ঘটনাটি ঘটেছিল। কারণ তারা দুজনেই ছিলেন একই কুরাইশ গোত্রের এবং তারা একই আঞ্চলিক ভাষা ব্যবহার করতেন। এটা বলা অসম্ভব যে, ওমর হিশামের উচ্চাণের সাথে পরিচিত ছিলেন না। বস্তুত, এই ঘটনা থেকে এটাই প্রতীয়মান হয়ে যে, সাতটি উচ্চার‌ণ মানেই শুধু সাতটি ভিন্ন গোত্রের উচ্চারণ নয়, নতুবা ওমর তাতে হিশামের তেলাওয়াতে নাক গলাতেন না (সূয়ুতি ১ম খন্ড, পৃষ্ঠা ১৩৬ দ্রষ্টব্য)।

এছাড়াও অন্যান্য মনীষীরা যেমন আল-তাবরী এ বিষেয়ে তর্ক করে বলেছেন যে, এই ভিন্নতা শুধুমাত্র উচ্চারণে বা তেলাওয়াতে সীমাবদ্ধ নয়। আরেকজন মনীষী তার সাথে একমত হয়ে বলেছেন–  ইবন মাসুদ পড়তেন এভাবেঃ “প্রত্যেক সময়ে (বিদ্যুৎ চমকানী) যখন আলোর ঝলক হতো তারা তখন সেখানে যেতেন (সূরা বাকারা ২: ২০) অথচ অন্য সময়ে, তিনি এভাবেও পড়তেন, ‘ভিতর দিয়ে যেতেন অথবা সামনে এগিয়ে যেতেন” যার অর্থ প্রায় একই কিন্তু উচ্চারণের ভিন্নতা ছিল।

এ কথা সত্য যে, কোরআনের সাতটি উচ্চারণে বা বচনে যা রয়েছে তা অনেক সময়ে ভিন্নতর অর্থ বহন করে। আর এ কারণেই ইসলাম বিশারদরা উভয় সংকটে পড়েন এর অর্থ উদ্ধারকল্পে। এমনকি সূয়ুতি নিজেও তার বইয়ের ১৩৬ পৃষ্ঠায় বলেছেন– এ কারণেই ইসলাম বিশারদদের মাঝে ভিন্ন মতামতের সৃষ্টি হয়েছে। কেননা এতে করে জিব্রাইলকে সাতবার সাতটি আয়াত নাজিল করতে হয়েছিল বলে মনে করা হয়।    

Leave a Reply