You are currently viewing কুরআন আল্লাহর বাণী নয় এটা মুহাম্মদ আনিত বাণী

কুরআন আল্লাহর বাণী নয় এটা মুহাম্মদ আনিত বাণী

  • Post author:
  • Post last modified:January 22, 2024

শিরোনামটি দেখে কি আপনি চমকে উঠেছেন? এতে চমকিয়ে উঠারই কথা। যে কেউই চমকে উঠতে পারে এ কথা শুনলে। কিন্তু আমরা কোরআনের আয়াতের বিশ্লেষণে তলিয়ে দেখতে পারি ব্যাপারটি। আসুন দেখা যাক কোরআন কি বলে এ বিষয়ে। সূরা আল হা-ক্বক্বাহ এর (৬৯) ৪০ আয়াতে কোরআন সাক্ষ্য দেয় ঠিক এভাবে-

إِنَّهُۥ لَقَوْلُ رَسُولٍۢ كَرِيمٍۢ ٤٠

“নিশ্চয় এ কুরআন একজন সম্মানিত বাসুলের কর্তৃক বাহিত বাণী”।একই কথার অবতারণা করা হয়েছে সূরা আত্ -তাকভীর ৮১:১৯ আয়াতে। এই আয়াতগুলি স্পষ্টট প্রমান করে কোরআন মুহাম্মদ আনিত বাণী। এছাড়াও, আমরা যদি সূরা আন’আম এর ১৬৩ আয়াতে দৃষ্টি নিক্ষেপ করি তাহলে এসব আরো বিশেষভাবে প্রমানিত হয় যে কোরআন মুহাম্মদ আনিত বাণী। সূরা আন’আম এর ১৬৩ তে বলা হয়েছে ঠিক এইভাবে- لَا شَرِيكَ لَهُۥ ۖ وَبِذَٰلِكَ أُمِرْتُ وَأَنَا۠ أَوَّلُ ٱلْمُسْلِمِينَ “এবং আমিই মুসলিমদের মধ্যে প্রথম। অর্থাৎ মুসলিম হিসেবে পরিচিতির চূড়ায় তাঁর (মুহাম্মদ এর) অবস্থান।

এহেনো বর্ণনানুযায়ী যদি তিনিই হন মুসলিমদের অগ্রদূত, তাহলে আমরা কেনো ইব্রাহীম (আঃ), মুসা(আঃ), দায়ুদ (আঃ) এর কথা বলি আর দাবি করে থাকি তাঁরাও মুসলিম বা ইসলামের নবী? ইসলামের উৎপত্তির অনেক অনেক বছর আগে তাদের পদচারণা ছিল এই জগতে। তাদের বিষয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই।

বস্তুতঃ ইসলামের ইতিহাস একটি ধার করা ইতিহাস। আরবীয় নবীর পূর্বেকার সব নবীরা বনি ইসরাইল থেকে আসা। ইবনে ইসহাক মুহাম্মদএর মৃত্যুর পর অত্যান্ত কৌশলে তাঁর (নবীজির) জন্ম-বৃত্তান্ত সীরাতুন্নবী গ্রন্থে লিখতে গিয়ে প্রচুর মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছেন এবং পূর্বেকার ইতিহাসের সাথে এই আরবীয় নবীর সংযোগ রচনা করেছেন। সেই থেকে ক্রামাগতভাবে ইতিহাসকে বিকৃত করে ইসলামকে প্রাধান্য পাইয়ে দেবার বাসনায় তিনি হাজার বছরের পূর্বেকার ইতিহাসের সাথে আরবীয় নবীকে সংযুক্ত করেছেন। যদিও তৎকালীন ইসলামের অন্যান্য ইতিহাস লেখকেরা তার এই কাজের প্রচুর সমালোচনা করেছেন এবং নতুনভাবে তা আবারও সাজানোর প্রচেষ্টা করেছেন। ইব্‌নে হিশাম পরবর্তীতে ইতিহাসের অনেকখানি পরিবর্তন এনেছেন। তা সত্ত্বেও এর সত্যিকার ইতিহাস আজো অসমাপ্ত রয়ে গেছে। সে যাইহোক, এ বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে অন্য প্রসঙ্গে যাওয়াটা এখন অপ্রয়োজনীয়,

ফিরে আসি আমাদের মূল বিষয়টিতে। বলছিলাম কুরআন আল্লাহর বাণী নয়।তা মুহাম্মদ আনিত বাণী

তারই আলোকে এবার লক্ষ্য করা যাক আরেকটি আয়াতের দিকে। এটি হলো সূরা আশ-শুআরা ৮৩ আয়াত। এখানে বলা হয়েছে- رَبِّ هَبْ لِى حُكْمًۭا وَأَلْحِقْنِى بِٱلصَّـٰلِحِينَ অর্থাৎ ‘হে আমার প্রতিপালক! আমাকে জ্ঞান দান করুন এবং আমাকে নেককার লোকদের শামিল করুন।” আয়াতটি পড়ে আপনার কি মনে হয় এটি আল্লাহ্ তায়ালা বলছেন? নাকি এটা স্পষ্ট যে এই বাক্যের উক্তিটি মুহাম্মদের! কথার ধরণ ও আয়াতের বর্ণনায় এটি অত্যান্ত স্পষ্ট কে বলছে এ কথা। আল্লাহ্ নিশ্চয় অন্যকে “প্রতিপালক” বলতে পারেন না। নিশ্চয় তাঁর জ্ঞানের প্রয়োজন নেই যে, সেজন্যে তিনি অনুগ্রহের বাসনায় কাতর হবেন। কিংবা কেনই বা তিনি বলবেন যেন তাঁকে নেককার লোকদের সাথে শামিল করা হয়। আল্লাহর কি এটা প্রয়োজন রয়েছে? তিনি কি পাপী?

আপনার কি মনে হয় এটি আল্লাহর কথা- قُلْ مَا كُنتُ بِدْعًۭا مِّنَ ٱلرُّسُلِ وَمَآ أَدْرِى مَا يُفْعَلُ بِى وَلَا بِكُمْ ۖ إِنْ أَتَّبِعُ إِلَّا مَا يُوحَىٰٓ إِلَىَّ وَمَآ أَنَا۠ إِلَّا نَذِيرٌۭ مُّبِينٌۭ অর্থাৎ ‘বলুনঃ আমি তো কোন নতুন রাসুল নই। আর আমি জানি না, আমার ও তোমাদের সাথে কি আচরণ করা হবে। আমার প্রতি যা ওয়াহী করা হয়, আমি তো তারই অনুসরণ করি। আর আমি তো একজন স্পষ্ট সতর্ককারী মাত্র।” (আল-আহকাফ ৪৬:৯ আয়াত)।

আরেকটি উল্লেখযোগ্য আয়াত লক্ষ্য করা যেতে পারে। যেখানে বলা হয়েছে- “বলুনঃ আল্লাহর শাস্তি থেকে আমাকে কেউই রক্ষা করতে পারবে না এবং তিনি ব্যতিরেকে আমি কোন আশ্রয়ও পাব না (সুরা আল- জিন ৭২: ২২ আয়াত)। এই আয়াত সমূহের বিশেষ ব্যাখ্যা না দেখেই আমরা অনুমান করতে পারি কে বলছে কথাগুলো এবং কাকে বলছে। এসব আয়াতসমূহে সুস্পষ্ট প্রকাশ মুহাম্মদের বাণীর, আল্লাহ্ নয়।

আরও অনেক আয়াতের আতারনা আমি করতে পারি। কিন্তু আমার মনে হয় না সেটার কোন প্রয়োজন রয়েছে। যে কোন ব্যক্তি আয়াত সমূহের বাংলা অনুবাদ পড়লেই বুঝতে পারবেন ঘটনাটির উৎপত্তি কোথায়। আমি আর একটি মাত্র আয়াতের উল্লেখ করেই বিষয়টির ইতি টানতে চাই। এটি নেওয়া হয়েছে সূরা লাহাব থেকে এবং এভাবে বর্ণিত হয়েছে তা-

تَبَّتْ يَدَآ أَبِى لَهَبٍۢ وَتَبَّ ١ مَآ أَغْنَىٰ عَنْهُ مَالُهُۥ وَمَا كَسَبَ ٢ سَيَصْلَىٰ نَارًۭا ذَاتَ لَهَبٍۢ ٣ وَٱمْرَأَتُهُۥ حَمَّالَةَ ٱلْحَطَبِ ٤ فِى جِيدِهَا حَبْلٌۭ مِّن مَّسَدٍۭ ٥

বঙ্গানুবাদঃ “ধ্বংস হোক আবু লাহাবের হাত দু’টি এবং ধ্বংস হোক সে নিজেও। তার মাল-দৌলত এবং সে যা উপার্জন করেছে যা তার কোন কাজে আসেনি। শীঘ্রই সে প্রবেশ করবে লেলিহান আগুনে, এবং তার স্ত্রীও যে কঠোর বোঝা বহন করে। তার গলায় থাকবে উত্তমরূশে পাকানো একটি শনের রশি ” (সূরা লাহাব ১১১:১-৫ আয়াত)। সূরাটির শানে নজুল বা বাংলা অনুবাদ পড়ে কি বুঝতে কষ্ট হয় যে এটা আল্লাহর কথা নয়? আল্লাহর সাথে আর লাহাবের পরিবারের কোন বিদ্ধেষ নেই বা ছিলোনা কোনদিন। তা ছিলো মুহাম্মদের সাথে। তাই সে অভিশাপ দিয়েছে আবু লাহাব কে। আল্লাহ্ কাউকে অভিশাপ দেন না। তিনি প্রয়োজনে শাস্তি দিতে পারেন যে কোন ব্যক্তিকে।

অতএব, অবস্থা দৃষ্টে আমরা দেখতে পাই উল্লেখিত কোরানিক আয়াতসমূহ আল্লাহর বাণী নয়। এসব মুহাম্মদের আনিত বাণী যা দিয়ে সে নবী সেজে আল্লাহর নামে মানুষকে বিভ্রান্ত করেছে। আজকের এই একবিংশ শতাব্দীতে তার এ কৌশল মানুষকে আর বোকা বানাতে পারে না। আসুন আপনার নিজস্ব বিশ্লেষণে সত্য আবিষ্কার করুন আর বেরিয়ে আসুন অন্ধকার থেকে সত্যের আলোর নির্ভেজাল পথে। আল্লাহর প্রশংসা থাকুক আমাদের প্রাত্যাহিকত জীবনে।

বিঃদ্রঃ কোরআনের আয়াত সমূহের বাংলা অনুবাদ নেওয়া হয়েছে আল-মাদানী কুরআন মাজীদ, হুসাইন আল-মাদানী প্রকাশনী থেকে।

Leave a Reply