সেই ছোটবেলা থেকেই আমরা শিখে এসেছি সূর্যোদয়ের ঘটনা যা পূর্ব দিকে ওঠে ও পশ্চিম দিকে অস্ত যায়। বয়সবৃদ্ধির সাথে সাথে সে ধারণা ক্রমশঃ পরিবর্তিত হয়েছে বৈজ্ঞানিক তত্ত্বের প্রভাবে। কিন্তু আমরা কখনো শুনি নাই যে, সূর্য এক পন্কিল জলাশয়ে ডোবে বা অস্ত যায়। আর যদি কেউ একথা শুনেও থাকে তাহলে তার মুচকি হাসির অভিব্যক্তিটি দমন করা মুশকিল হবে।
বলছিলাম এই সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত বিষয়ক কোরআনের পান্ডিত্বের কথা। আমার কথায় বিশ্বাস হচ্ছে না? তাহলে চলুন কোরআনের আয়াতের ব্যাখ্যাসমূহ একটু পর্যালোচনা করে দেখি। প্রথমতঃ আমরা দেখবো সূরা কাহ্ফ এর ১৮: ৮৬ আয়াতটি যেখানে বলা হয়েছে-
حَتَّىٰٓ إِذَا بَلَغَ مَغْرِبَ ٱلشَّمْسِ وَجَدَهَا تَغْرُبُ فِى عَيْنٍ حَمِئَةٍ وَوَجَدَ عِندَهَا قَوْمًا ۗ قُلْنَا يَـٰذَا ٱلْقَرْنَيْنِ إِمَّآ أَن تُعَذِّبَ وَإِمَّآ أَن تَتَّخِذَ فِيهِمْ حُسْنًا (٨٦)
বাংলা অনুবাদঃ “চলতে চলতে সে যখন সূর্যাস্তলে পৌঁছাল তখন সে সূর্যকে এক পন্কিল জলাশয়ে ডুবতে দেখল এবং সেখানে এক কত্তমকে দেখতে পেল। বললাম, ‘হে জুলকারনাইন! তুমি এদের শাস্তি দিতে পার বা সদ্ব্যবহার করতে পার।”
আবার একই সূরার ৯০ আয়াতে বলা হয়েছে-
حَتَّىٰٓ إِذَا بَلَغَ مَطْلِعَ ٱلشَّمْسِ وَجَدَهَا تَطْلُعُ عَلَىٰ قَوْمٍ لَّمْ نَجْعَل لَّهُم مِّن دُونِهَا سِتْرًا (٩٠)
বাংলা অনুবাদঃ “চলতে চলতে যখন সূর্যোদয়স্থলে পৌঁছাল তখন তা এমন এক কাত্তমের উপর উদয় হচ্ছে যাদের সূর্য-তাপ হতে বাঁচার কোন উপায় রাখেনি;”
একটু ভেবে দেখুন তো কি এক বৈজ্ঞানিক তথ্যগত ভুল পরিলক্ষীত হচ্ছে এখানে? প্রথমতঃ বৈজ্ঞানিক তথ্যানুযায়ী সূর্য কখনো পন্কিল জলাশয়ে অস্ত যায় না। দ্বিতীয়তঃ এটা সম্ভবত সমান পৃথিবীর ধারণা হতে উদ্ভত। তা নাহলে কিভাবে পূর্ব ও পশ্চিমের শেষ প্রান্ত থাকতে পারে? সূর্যোদয় সব জায়গাতে একইভাবে হতে পারে, সমুদ্রে অথবা ভূমিতে, যদি পৃথিবী হয়ে থাকে সমান বা সমন্তরাল। একইভাবে সব জায়গাতে দেখা যাবে যে সূর্য দূরত্বে অস্ত যাচ্ছে।
এখন কিভাবে এই আয়াতগুলিতে বলা হলো যে, সে সূর্যাস্তলে পৌঁছাল এবং দ্বিতীয়বারের যাত্রায় সে সূর্যোদয়ের স্থলে পৌঁছাল ? এটা কিভাবে স্বম্ভব তা একমাত্র আল্লাহ তায়ালাই জানেন। কিংবা তাঁর হয়ে কে ঢোকালো এ তথ্য কোরআনের আয়াতে?
আল্লাহর পক্ষে কি এহেন ভুল করা সম্ভব? একটু ভেবে দেখবার বিষয় বটে! এতো তথ্যগত ভুল কি কোরআনে থাকতে পারে? কখনো কি ভেবেছেন তা সম্ভব? তাহলে এটা কি স্পষ্ট নয় যে, কোরআন আল্লাহর বাণী নয়!
আয়াতে বলা আছে, সে সূর্যকে পঙ্কিম জলাশয়ে ডুবতে দেখল, এই আয়াত দ্বারা কোরআনের আয়াতকে ভুল প্রমাণ করতে গিয়ে নিজেই ভুল করে বসলেন। আয়াতে স্পষ্ট বলা আছে সে দেখল। আপনি যখন কক্সেস বাজার সৈকতে যাবেন তখন ও এটাই দেখতে পাবেন সূর্য সমুদ্রের ভেতর ডুবে যাচ্ছে। আমি যদি আপনাকে তখন জিঞ্জাসা করি আপনি কি দেখতে পেলেন। আপনি কি বলবেন আমি দেখলাম পৃথিবীর আহ্নিক গতির অর্ধেক পেরিয়ে যাওয়ার ফলে পৃথিবীর যে প্রান্তে আমি অবস্থান করছি সে প্রান্তটা সূর্য যে দিকে অবস্থান করছে তার বিপরীত দিকে চলে গেছে? না কি যেটা দেখছেন সেটা বলবেন? আয়াতে স্পষ্টত বলা আছে সে দেখল, এর মানে এটা না যে সে দেখেছে সেটাই হচ্ছে। আমরা জনি, এরিস্টটলের সেই থিওরি যা দেখবে তাই বিশ্বাস করবে এটা ভুল। কোরআনে আয়াত গুলো প্রায় ১৪৫০ বছর আগে এসেছে। যার মধ্যে বহুসংখ্যক বৈজ্ঞানিক আয়াত আজকের দিনে বিজ্ঞান প্রমাণ করছে! তাই কোরআনকে আগে বুঝতে শিখুন এবং বিজ্ঞান ভালো করে জানুন, অতঃপর বুঝতে পারবেন নিজেরই ভুল ছিলো।